Bangla UGC NET Unit 3 - ঈশ্বর গুপ্তের স্নানযাত্রা কবিতার প্রশ্ন উত্তর :
ঈশ্বর গুপ্তের স্নানযাত্রা কবিতার বিষয়বস্তু:
স্নানযাত্রার দিনে মেলা বসেছে ।ধনী গরিব সকলেরই সুখের দিন। সবাই সুসজ্জিত বেশবাস করেছে। নানা রকম সাজে সেজেছে। মানুষ স্নানযাত্রায় যাবার আগে খাবার তলাস লাগায়। লুচি মন্ডা ইত্যাদি খাবার আসে ।অপূর্ব মনোহর স্নানযাত্রার দৃশ্য।ঈশ্বর গুপ্তের স্নানযাত্রা কবিতা
- ঈশ্বর গুপ্তের স্নানযাত্রায় কবিতায় প্রাধান্য পাচ্ছে– মধ্যযুগীয় দেবদেবীর বদলে বস্তু চেতনা। তার চারপাশের যা তিনি দেখছেন তাই তার কবিতায় স্থান পেয়েছে। অর্থাৎ খাদ্যদ্রব্য থেকে শুরু করে সামাজিক অনুষ্ঠান, সমস্যা সবকিছুকেই তিনি তার কবিতায় তুলে ধরেছেন।
- তিনি বস্তুত রিয়েলিস্ট ও সাটারিস্ট অর্থাৎ তার কবিতায় ব্যাঙ্গের মাধ্যমে সমস্যাগুলিকে তুলে ধরে তার মর্মার্থকে পাঠকদের উপলব্ধি করিয়েছেন এই কবিতার মধ্য দিয়ে।।
- ঈশ্বর গুপ্তের কবিতায়– জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রাকে তুলে ধরা হয়েছে।
- এটি হিন্দু ধর্মের একটি পবিত্র আচার অনুষ্ঠান।
- জৈষ্ঠ্য মাসের বৃষ পূর্ণিমা তিথিতে জগন্নাথ দেবের জন্মতিথি। সেই উপলক্ষে জগন্নাথ দেবকে স্নান করানো হয়।
- বহু ভক্ত গঙ্গা স্নানের মাধ্যমে পূর্ণ অর্জন করার জন্যে এই দিনটিকে বেছে নেয়।
- স্নানযাত্রা উৎসব মূলত জগন্নাথধাম গুলোকে কেন্দ্র করেই হয়। যেমন – পুরি ও মাহেশে এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়।
- এই কবিতায় "মাহেশের স্নানযাত্রা"কে প্রাধান্য দিয়েছেন কবি।
- কবি বলেছেন আমাদের বঙ্গ নানান রঙ্গে, রাগে, রসে ভরা ।যার মধ্যে একটি হচ্ছে বৃষ পূর্ণিমা তিথির স্নান যাত্রা।
- প্রতিবছর মাহেশের স্নানযাত্রা উপলক্ষে মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
ঈশ্বর গুপ্তের "স্নানযাত্রা" কবিতার লাইন অনুযায়ী বর্ণনা:
★এই দিন ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলেই সুখের দিন হয়ে ওঠে ।★অনেক দিন আগে থেকেই এই আয়োজন শুরু হয় সকলের বিলাতি জুতো ধুতি জামা কাপড় পড়ে ফিটফাট হয়ে মেলা উপভোগ করে।
★কবি বলেছেন –
"এসে বাড়ী যত রাঁড়ী কাঁকে করে কেঁলে হাঁড়ি
হাতে পাখা কাঁঠাল মাথায়।।"
অর্থাৎ মেয়েরা মেলা থেকে গৃহস্থ জিনিস হাড়ি, পাখা, কাঁঠাল ইত্যাদি কিনে আনে ।
★ঈশ্বর গুপ্তের "স্নানযাত্রা" কবিতার সাথে "হুতুম প্যাঁচার নকশা" উপন্যাসের মিল পাওয়া যায়।
★কবি আরো বলেছেন:
" ধূতির কিনারা কালা, গলায় পড়িয়া মালা,
রোঘো খেকো, রোঘো সব সাজে।।"
★ঈশ্বর গুপ্ত হিন্দু আচার অনুষ্ঠানকে তার কবিতার বিষয়বস্তু করে তুললেও তিনি কিন্তু ধর্মপ্রান ছিলেন না। সেটা এই লাইনে প্রকাশ পেয়েছে। পূর্ণ তিথিতে একবার স্নান করে পাপ বা কালো থেকে মুক্ত হওয়া যায় না ,সেটা মনের কালো হোক বা ধুতির কালো ময়লা হোক না কেন।
★শাণিত ব্যঙ্গ প্রকাশ পেয়েছে তার এই লাইনে ।যেমন :
" খুলে তরী কত ধূম, ধূম করে উঠে ধূম,
দেখে ঘুম করিল শ্রীহরি।।.....
ফুলায় বুকের ছাতি যেন নবাবের নাতি ,
হাতি কিনে হয়ে বসে ভূপ ।।"
অর্থাৎ এখানে বোঝানো হয়েছে সাধারণ মানুষ কোন অনুষ্ঠানকে নিয়ে এতটাই মেতে ওঠে ,যেখানে অনুষ্ঠানের আসল মাহাত্ম্য হারিয়ে যায়। এখানে স্নানযাত্রা অনুষ্ঠানের নামে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে নির্বিশেষে বাবুয়ানা দেখা দিয়েছে। তারা মদ নিয়ে মাতামাতি করছে তাই প্রভু জগন্নাথ বিরক্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।
★অর্থাৎ সাধারণ মানুষ পূণ্যের আশায় মাহেশে এসে স্নান করছে কিন্তু তাদের এই আরম্ভরে প্রভু জগন্নাথ তুষ্ঠ হওয়ার পরিবর্তে বিলুপ্ত হয়েছেন ।
★কবি ঈশ্বর গুপ্ত এখানেই ক্ষান্ত হননি ।কবিতার শেষের দিকে তিনি লিখেছেন –
"সকলেই ঘোর শাক্ত কোনো ক্রমে নহে ভাক্ত
সেইরুপ আচার ব্যভার
সহজে সুখের যোগ রীপুর পঞ্চম ভোগ
আদ্য তার করে সহকার।।"
অর্থাৎ জগন্নাথদেব বৈষ্ণবদের কবিতা। বৈষ্ণবদের দেবতা ভক্তিবাদের কথা বলে।
★ভক্তিবাদের স্নান করে পূর্ণ অর্জন করা হয় এই দিনে । অর্থাৎ সাধারণ মানুষ পূণ্য অর্জনের নামে সাময়িক সুখ খুঁজে বেড়ায়।
★সুখ খোঁজে ষড়রিপুর পঞ্চ উপাদান অর্থাৎ মদের মধ্য দিয়ে ।
★মদ এবং কাম তন্ত্রসাধনার অঙ্গ। শাক্ত ধর্মাবলম্বীদের আচার অনুষ্ঠান আসলে এটা শাক্তদের অনুষ্ঠান।
★বাস্তববাদী ভালো দিকও আছে তার কবিতায় ।এই কবিতার স্নানযাত্রার মধ্য দিয়ে পুণ্য খুঁজে পাননি কবি বরং অন্য এক বিষয়ের সন্ধান তিনি পেয়েছেন।
★এই দিনটি আসলে ধোবাদের অনুষ্ঠান ।কেউ ধোবাদের কাছ থেকে জামা ধার করে ময়লা করে। আবার কেউ ময়লা জামা পড়ে পরিষ্কার করে।
★এতে ধোবার অবস্থার সচ্ছল হয় কারণ জলেই তাদের উপার্জন ।তাই স্নানযাত্রার মাহাত্ম্য তারাই বোঝে সে আর্থিকভাবেই হোক।
★মাহেশের "স্নানযাত্রা" নিপুন বর্ণনা দিয়ে বাস্তববাদী কবি বলেছেন–
"আমি যে অভাগা অতি স্বভাবতঃ ক্ষীণমতী,
কোনো কালে মাহেশে না যাই।
ইচ্ছা হেন থাকে জ্ঞান, করিয়া বিভুর ধ্যান,
ঘরে যেন মুক্তিস্নান পাই ।।"
অর্থাৎ কোন আরম্ভর না করেই তিনি ঈশ্বরকে পেতে চান।
★মন্তব্য : সকলেই ঘোর শাক্ত/ কোনো ক্রমে নহে ভাক্ত /সেইরুপ আচার ব্যভার।
★যুক্তি : সহজে সুখের যোগ /রীপুর পঞ্চম ভোগ/ আদ্য তার করে সহকার।।"
"সকলেই ঘোর শাক্ত কোনো ক্রমে নহে ভাক্ত
সেইরুপ আচার ব্যভার
সহজে সুখের যোগ রীপুর পঞ্চম ভোগ
আদ্য তার করে সহকার।।"
অর্থাৎ জগন্নাথদেব বৈষ্ণবদের কবিতা। বৈষ্ণবদের দেবতা ভক্তিবাদের কথা বলে।
★ভক্তিবাদের স্নান করে পূর্ণ অর্জন করা হয় এই দিনে । অর্থাৎ সাধারণ মানুষ পূণ্য অর্জনের নামে সাময়িক সুখ খুঁজে বেড়ায়।
★সুখ খোঁজে ষড়রিপুর পঞ্চ উপাদান অর্থাৎ মদের মধ্য দিয়ে ।
★মদ এবং কাম তন্ত্রসাধনার অঙ্গ। শাক্ত ধর্মাবলম্বীদের আচার অনুষ্ঠান আসলে এটা শাক্তদের অনুষ্ঠান।
★বাস্তববাদী ভালো দিকও আছে তার কবিতায় ।এই কবিতার স্নানযাত্রার মধ্য দিয়ে পুণ্য খুঁজে পাননি কবি বরং অন্য এক বিষয়ের সন্ধান তিনি পেয়েছেন।
★এই দিনটি আসলে ধোবাদের অনুষ্ঠান ।কেউ ধোবাদের কাছ থেকে জামা ধার করে ময়লা করে। আবার কেউ ময়লা জামা পড়ে পরিষ্কার করে।
★এতে ধোবার অবস্থার সচ্ছল হয় কারণ জলেই তাদের উপার্জন ।তাই স্নানযাত্রার মাহাত্ম্য তারাই বোঝে সে আর্থিকভাবেই হোক।
★মাহেশের "স্নানযাত্রা" নিপুন বর্ণনা দিয়ে বাস্তববাদী কবি বলেছেন–
"আমি যে অভাগা অতি স্বভাবতঃ ক্ষীণমতী,
কোনো কালে মাহেশে না যাই।
ইচ্ছা হেন থাকে জ্ঞান, করিয়া বিভুর ধ্যান,
ঘরে যেন মুক্তিস্নান পাই ।।"
অর্থাৎ কোন আরম্ভর না করেই তিনি ঈশ্বরকে পেতে চান।
ঈশ্বর গুপ্তের স্নানযাত্রা কবিতার প্রশ্ন উত্তর:
- স্নানযাত্রা কবিতাটির চরণ সংখ্যা– ১০৪ টি।
- মূল কবিতা– ত্রিপদী ছন্দে লেখা ।
- স্নানযাত্রা কবিতাটিতে কবি ঈশ্বর গুপ্ত বিশেষ উৎসব হিসেবে – মাহেশের স্নানযাত্রার উল্লেখ করেছেন।
- এই কবিতায় –বৃষ পূর্ণিমা তিথির উল্লেখ আছে।
- স্নানযাত্রা কবিতায় স্নানযাত্রা কথাটির একবার উল্লেখ আছে।
- স্নান কথাটি – দুবার উল্লেখ আছে ।
- এই কবিতায় বাদ্যযন্ত্র হিসেবে – তবলার উল্লেখ আছে।
- কবিতায় – শ্রীহরি, কুবের এবং শিব দেবতার উল্লেখ আছে।
- ঈশ্বর গুপ্তের স্নানযাত্রা কবিতায় ফল হিসেবে– আম ও কাঁঠালের উল্লেখ আছে ।
- কবিতায় মাহেশ কথাটি – দুবার উল্লেখ আছে।
- কবিতায় পশু হিসেবে– হাতির উল্লেখ আছে।
- কবিতায় বর্ণিত মেলা থেকে –মেয়েরা হাঁড়ি, পাখা ও কাঁঠাল কিনে নিয়ে আসে।
- কবিতায় – বাদশা শাহ আলমের কথা আছে।
- শিব কথাটি – দুবার উল্লেখ আছে।
- জাতিগুলির নাম ক্রমানুসারে সাজালে হবে – হাড়ি-মুচি -যুগী -জোলা।
- ঠেলাঠেলি, চুলোচুলি ঝুলোঝুলি ,কোলাকুলি – এর মধ্যে কবিতায় কোলাকুলি কথাটির উল্লেখ নেই।
- কবিতায় ঈশ্বর গুপ্ত মাহেশের স্নানযাত্রার ছবি তুলে ধরেছেন।
- কবিতায় স্নান, স্নানযাত্রা শিব এবং শক্তি কথাটির মধ্যে বেশি বার যে কথাটির উল্লেখিত হয়েছে সেটি হল –শক্তি (৬ বার।)
- কবিতায় সব থেকে বেশি আনন্দ– ধোপার।
- "মুক্তি স্নান" কথাটি উল্লেখ আছে– একবার।
- এই কবিতার সঙ্গে কালীপ্রসন্ন সিংহের "হুতুম প্যাঁচার নকশা" উপন্যাসের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
স্নানযাত্রা" কবিতার মন্তব্য ও যুক্তি
★মন্তব্য : সকলেই ঘোর শাক্ত/ কোনো ক্রমে নহে ভাক্ত /সেইরুপ আচার ব্যভার।
★যুক্তি : সহজে সুখের যোগ /রীপুর পঞ্চম ভোগ/ আদ্য তার করে সহকার।।"
Disclaimer:
নমস্কার বন্ধুরা, আমার নাম নিহারিকা গাঙ্গুলী। আশা করি তোমরা প্রত্যেকেই ইউজিসি নেট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছো । তাই তোমাদের সকলেরই সুবিধার্থে নেট সেট পরীক্ষায় খুব সহজেই যাতে তোমরা কোয়ালিফাই করতে পারো ,সেই কারণে আমি তোমাদেরকে গাইড করার জন্য Bangla UGC NET Syllabus এর প্রতিটি অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করব। একের পর এক সিরিজ অনুযায়ী ।দয়া করে তোমরা আমার ওয়েবসাইট ফলো করো। তাহলে তোমরা উপযুক্ত সময়ে নোটিফিকেশন পেয়ে যাবে।
তোমাদের যে সকল বন্ধুরা বাংলা ইউজিসি নেট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাদের সাথেও এই আমার ব্লগ লিংক শেয়ার করে দিও ।যাতে তাদের উপকার হয়।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
If you have any questions please ask