নমস্কার বন্ধুরা, আমি Niharika। আজ আমাদের আলোচনার বিষয় অমিয়ভূষণ মজুমদার এর "নির্বাস" উপন্যাস। উপন্যাসের সমস্ত গুরুত্বপূর্ন সম্ভাব্য প্রশ্ন আলোচনা করা হলো। বাংলা ইউজিসি নেট এবং WB SET পরীক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই "নির্বাস" উপন্যাসটি।
নির্বাস উপন্যাসের প্রশ্ন উত্তর আলোচনা - Bangla UGC NET/WB SET :
- নির্বাস উপন্যাসটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রচিত ছিন্নমূল উদ্বাস্তু জীবনের বৈচিত্র্যময় রূপ।
- উপন্যাসটি কেন্দ্রীয় চরিত্র বিমলা ।তাকে কেন্দ্র করেই উপন্যাসের সূচনা এবং পরিসমাপ্তি।
- বিমলার অতীত স্মৃতি রোমন্থনেই উপন্যাসের গতিময়তা পরিলক্ষিত হয়।
- উপন্যাসের পরিচ্ছেদ জুড়েই রয়েছে বিমলার ১৭ বছরের রোদ জল সহ্য করে টিকে থাকার কাহিনী।
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে মায়ানমারের উপর মিত্রপক্ষের আক্রমণের সংবাদ পেয়ে বিমলাকে রেঙ্গুন ছেড়ে তার দিদি ও ভুবন বাবুর সাথে বেরিয়ে পড়তে হয়।
- উপন্যাসটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে।
- নিত্তলিট থেকে উপন্যাসটির প্রথম সংস্করণ প্রকাশ পায় ৯ই মাঘ ১৩৬৬ বঙ্গাব্দ।
- নির্বাস উপন্যাসের প্রচ্ছদপট করেন খালেদ চৌধুরী।
- দে'জ প্রথম সংস্করণ ১৯৯৬ জানুয়ারি।
- দে'জ এর প্রচ্ছদ অজয় গুপ্ত করেছেন।
- অমিয়ভূষন মজুমদার এর জন্ম ১৯১৮ এবং মৃত্যু ২০০১ সালে।
- ঔপন্যাসিক এর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হলো —"গড় শিখন্ড"; "নয়নতারা"; "দুখিয়ার কুঠি";, "রাজনগর"; "চাঁদ বেনে"; "বিশ্বমিত্তির পৃথিবী"; "বিবিক্তা"; "এই দেশ"।
অমিয়ভূষণ মজুমদার - নির্বাস উপন্যাস:
- নির্বাস উপন্যাসটির পরিচ্ছেদ সংখ্যা— সাতটি।
- নির্বাস উপন্যাসটি উৎসর্গ করা হয় অধ্যাপক শ্রীমান নবকুমার নন্দীর করকমলে ।
- নির্বাস উপন্যাস সম্পর্কে মজুমদার প্রথমেই একটি উদ্ধৃতি দিয়েছেন সেটি হল — "এটি রাজনৈতিক উপন্যাস নয়। যদি রাজনীতির কোন ইশারা এসে গিয়ে থাকে তবে তার প্রতিপাদ্য রাজনীতি উদ্বাস্তুকে তার বাস্তু ফিরিয়ে দিতে পারে না। যদি কিছু রাজনীতি করে তা মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলা মানুষদের নিয়ে ভোটের ব্যবস্থা করতে পারে।"
- অমিয়ভূষণ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস — "নীল ভূইঞা"।
- "রাজনগর" উপন্যাসের জন্য অমিয়ভূষণ মজুমদার বঙ্কিম পুরস্কার পান।
- শেষ উপন্যাস ফ্রাইডে আইল্যান্ড অথবা (নরমাংস ভক্ষণ এবং তাহার পরে)।
- "নির্বাস" উপন্যাসটির সূচনায় বসন্ত ঋতুর উল্লেখ আছে।
- হলুদমোহন হাট ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ সময়কালে সৈন্য বিভাগের একটা বড় রকমের ঘাঁটি ছিল ।হলুদ মোহন ঘাটের নিদর্শন হল কয়েকটি জাহাজের মোছড়ানো দোমড়ানো ভগ্নাবশেষ যা আছে প্রান্তরে দক্ষিণ সীমা ঘেঁষে।
- হলুদ মোহন এখনো একটা ঘাঁটি, কিন্তু বাস্তুহারা দের।
- ছয় হাত বাই চার হাত তাবু এক একটিতে একটি করে অনেকগুলি পরিবার ছিল।
- এই বাস্তুহাদের যে ক্যাম্প ছিল তার নাম হলুদমোহন ক্যাম্প।
- লেভেল ক্রসিং এর দরজা বন্ধ করা হতো দুপুর তিনটে ত্রিশ মিনিটে।
- গুমটি থেকে লাইনের বিপরীতে লাইনের দিকে কৃষ্ণচূড়া গাছের ডাল ঝুঁকে পড়েছিল।।
- বিমলার কোলে ছিল উলের বল ।
- বিমলার বয়স ৩৩ বছর।
- বিমলা বাংলাদেশ পৌঁছতে পেরেছিল।
- বিমলার বাবার কাঠের কারবার ছিল।
- যুদ্ধের খবর শুনে বিমলার বাবা বিমলা ও তার দিদি ও ভুবন বাবুকে রেঙ্গুন থেকে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু বিমলার বাবা স্ত্রীর স্মৃতি জড়ানো গৃহটি ত্যাগ করে আসতে পারেন নি।
- মিত্রপক্ষ রেঙ্গুন দখল করার জন্য বোমা ফেলেছিল।
- ব্রজযোগিনীতে অভাব থাকলেও কেউ প্রকাশ করত না।
- হলুদ মোহন ক্যাম্পে সকলে অভাবটাই বেশি প্রকাশ করে।
নির্বাস উপন্যাসের বিষয়বস্তু:
- গাঙ্গুলি মশায়ের বড় মেয়ে রাজনীতি করে।
- সেন খুড়োর মেজ মেয়ে তানপুরা নিয়ে ঘোরে।
- বিমলা ছমাস পরে দর্পনে নিজ মুখ দর্শন করেছিল।
- আট বছরের অভ্যাস কাটিয়ে উঠতে পারছে না।
- সময় কালটি ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৫।
- আয়নায় বিমলার চোখের মনি দেখতে ছিল ফিরোজা রঙের ।
- "এ চোখ তো ভালো নয়" — এই উক্তি সম্পর্কে মন্তব্য গুলি হল :
- এই উক্তিটি গ্রামের এক প্রতিবেশী বৃদ্ধা, রেঙ্গুনে থাকাকালীন বলেছিল।
- এই উক্তিটি বিমলা সম্পর্কে তার মাকে বলেছিল বৃদ্ধা ।
- তিনি বলেছিলেন এই চোখের স্বামী টেকে না। ভুবন বাবু বীমা করেছিলেন হাজার টাকার।
- ইলাসট্রেটড ,উইলকিতে অনেক ছবির মধ্যে বিমলার পছন্দ হয়েছিল যীশুর ক্রুশে আহরণ।
- বিমলা ও ভুবনবাবুর মধ্যে বয়সের তফাৎ ছিল দশ বছর।
- " কানে যত কথা যায়, সে বলে তার চাইতেও বেশি"- কে?— গাঙ্গুলির বউ।
- হলুদমোহন পল্লীতে বিমি ও ভুবন একই বাড়িতে কত বছর ধরে আছে?— দুই বছর।
- হলুদ মোহন ক্যাম্পে একবার বন্যা হলেও উদ্বাস্তুরা সাতদিন ধরে স্কুল বাড়িতে থেকেছিল। স্থানীয় মারওয়ারি লঙ্গরখানা খুলেছিল।
- তারা দুবেলা খেতে দিত ।দিনে ভাত, ডাল, তরকারি এবং রাতে পাতলা খিচুড়ি।
- স্কুলের ক্লাস এইট এর ঘরটায় ছটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল।
- মরণচাঁদ সকল উদ্বাস্তুদের কাছ থেকে ২ পয়সা মাথাপিছু নিয়ে তাদের জন্য এনে দিয়েছিল পেঁয়াজ বড়া।
- বিমলার ক্যাম্পের ঠিকানা ছিল হলুদ মোহন ক্যাম্প, গ্রুপ নম্বর ছয় ,তাবু নম্বর ২৭, কার্ড নম্বর ৫৮৭।
- বিমলা কুড়িয়ে পেয়েছিল একটা সিকি।
- বিমলা কুড়িয়ে পাওয়া সিকি দিয়ে কিনেছিল রজনীগন্ধা ফুল।
- ক্লাস এইটের ঘরের উদ্বাস্তুদের সেই রাতে বিমি ভুবন বাবুর স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়েছিল ।
- মালতি ছিল কর্মঠ মেয়ে।
- নারী শিল্প শিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের দিনে শহর থেকে এক বড় গোছের সরকারি স্ত্রী কর্মচারী সভাপতি তো করতে এসেছিলেন।
- ম্যাক ব্রাইডের একটা দাঁত সোনা দিয়ে বাধানো ছিল।
অমিয়ভূষণ মজুমদারের নির্বাস উপন্যাসের প্রশ্ন উত্তর আলোচনা:
- বিমলা একবার জ্ঞান হারিয়ে নিজেকে বিশপে হসপিটালে পেয়েছিল ।
- গত বছর ক্যাম্পে দুর্গোৎসব হয়েছিল ।
- ক্যাম্পের প্রধান কর্মচারী অজয়।
- যশোরের গির্জার কর্মচারীটি এক বছরে তিনবার অসুস্থ হয়েছেন।
- তাই তাকে যশিদি বদলি করা হয়েছিল।
- যশোরের কর্মচারীর স্ত্রী ওখানকার হসপিটালের মেট্রন ছিলেন ।
- বেঞ্জামিন এর সঙ্গে বিমলাও যশোর রওনা হয়েছিল।
- পুরাতন কাছারিটি এখন ভারতীয় ডাকঘর।
- ভুবনবাবু একদিন নীল দাঁড়ি গল্প বলেছিল।
- রবিবার খবরের কাগজের আড্ডা বসে।
- "ভাগে কেনা কাগজ"– কার সাথে কার এখানে বলা হয়েছে? — রায় সেন মহাশয়।
- হলুদ মোহন ক্যাম্পের মোটামুটি দেখতে গেলে দুটি পাড়া ছিল।
- ক্যাম্পের কর্তার ঘরের কাছাকাছি কতগুলি তাবুতে একটা ভদ্রলোকের পাড়া।
- এই অংশেই বেশি চিঠিপত্র আসত। কখনো ৫ বা ১০ টাকা মানি অর্ডারও আসতো ।
- হলুদমোহন ক্যাম্পে একটা গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়েছিল ।সেখানে একশটা বই এবং দৈনিক পত্রিকা থাকতো।
- উদ্বাস্তুদের মধ্যে মোহিতবাবুর স্ত্রী পালিয়েছিল। বিমলা যখন ক্যাম্পে ছিল তখন ক্যাম্পের কর্তা ছিল সুরেনবাবু।
- রেশন ব্যবস্থা শুরু হয়েছে ৪৩ থেকে ।
- গুহগিন্নীর সঙ্গে লতার ঝামেলা হয়েছিল মাফলার নিয়ে।
- লাইব্রেরীটা স্থাপনের মূলে ছিল মোহিতবাবু। ক্যাম্পের দু'নম্বর কলে বিমলার সঙ্গে দেখা হয়েছিল লতার ।
- গুহ মশাই কল চালাচ্ছিল ও লতা গা মুছে কাপড় ধুচ্ছিলl
- শ্রীকান্ত ও বিন্দার একটি ছেলে হয়েছিল।
- সে জঙ্গলে সবচেয়ে বড় গাছ ছিল খেজুর ও বাবলা। আর চারদিকে ঘেটুবন। ৫ টি পরিবারের জন্য ছটি ঘর তৈরি করা হবে ।সন্ধ্যায় চারটি ঘর বানানো শেষ হয় ।সবুজ রং করা হয়।
- ক্যাম্পে সবাই বিমলাকে মা ঠাকরুন বলে সম্মোধন করত।
- জমির মালিক বৃহস্পতিবার উঠে যেতে বলেছিল।
- উপন্যাসের সাপের দংশনে মারা যায় হিরন। ভুবন বাবুর পুরনো ডি.এ বিল এর টাকায় কিনেছিলেন বিমির জন্য বালা( হাতির দাঁত ও সোনার তার দিয়ে)।
- কলকাতার পথে হলুদমোহনে পৌঁছায় বিমলা।
- এই শহরের একটা বৈশিষ্ট্য হাট প্রতিমাসের শেষ দিকে বসে।
- স্থানীয় গ্রামবাসীদের ভাষায় প্রতিমাসের মেলা হল এই হাট।
- সাধারণ হাটে স্ত্রীলোকেরা যায় না কিন্তু মেলায় যায়।
- হলুদ মোহন ক্যাম্পের ১৫ টি পরিবার বলেছে কেটে ফেললেও তারা যাবে না বাংলার বাইরে।
- হলুদ মোহন ক্যাম্পে বন্যা হয়েছিল ৫৬ এর মাঝামাঝি সময়ে।
- বিমলা কাজ করত চা এর বাগানে।
- চা বাগান থেকে ক্যাম্পের দূরত্ব ছিল এক ক্রোশ।
- সোদামনি ও অভিমন্যু কৃষ্ণচূড়া ও মন্দার গাছের মতন চ্যুত ,স্থলিত যা নাকি স্বর্গের।
- নারী শিল্প সমিতির প্রধানার বয়স ৪৬।
- পুনর্বাসন দপ্তরের কাছেই ছিল একটা বটগাছ যার গোড়ায় বাধানো চাতাল।
- অজয় বাবুর সঙ্গে বিমলার রাস্তায় দেখা হয়। অজয় প্রথমে মোহিত বাবুর জন্য বই নিতে লাইব্রেরীতে যান তারপর সুরথবাবুর জন্য মশারি কিনতে বাজারে যান।
- অজয় বিমলাকে একটি ইংরেজি কবিতার কথা বলেছিল – পৃথিবীটা এক বুড়ি লকড়ী খুঁজে পাক খাচ্ছে।
- "উদ্বাস্তু জীবনের এটাই বোধহয় স্থায়ী চিহ্ন থেকে গেলো।"— কোন চিহ্নের কথা বলা হয়েছে?— বুকের রোগ।
নির্বাস উপন্যাস pdf
- শহরে নতুন পাড়ার মধ্যে হলেও চারিদিকে তুলনায় প্রাচীন পাড়া — ব্রাহ্মপাড়া ।
- মন্দিরের দেয়ালের গায়ে বিবর্ণ শালুতে লেখা ব্রহ্মের কৃপার কথা ,হরের্নামৈব কেবলম।
- 'ভেসপার' হল সন্ধ্যার প্রার্থনাকে বোঝায়।
- মন্দিরে আচার্য প্রার্থনা করছিল।
- আচার্য হয়তো কিছু মাসোহারা পেতো প্রার্থনার শর্তে।
- " বিমলার হৃদপিণ্ডটা যেন থমকে দাঁড়ালো"- কোন কথায়?— আত্মহত্যার কথায়।
- লতার বাবা ১৯১০ থেকে ১৯৩৯ এর মধ্যে ২১ বছর জেলে কাটিয়েছিলেন।
- লতার বাবা পুলিশের চাকরি ছাড়েন বঙ্গভঙ্গের হুজুগে।
- লতার বাবা যখন জেল থেকে ফেরত আসে তখন লতার বয়স ১১ বছর।
- গিরিশ বাবু আন্দামানে ১০ বছর ছিলেন পক্ষাঘাতে অসার হওয়ার আগে।
- বিয়াল্লিশে আই.বি.র দারাগো তে মোহিতবাবুর কাজ হয়েছিল।
- উদ্বাস্তুদের নিয়ে যাওয়ার জন্য দণ্ডকারণ্যে পাঠানোর জন্য পাঁচটি বাস এসেছিল।
- বিন্দার কোলে শিশুটির বয়স ছিল এক মাস।
- ড্রাইভার হঠাৎ গাড়িটা থামায় কারণ ওই গাড়িটিতে আলো জ্বলছিল না, তাই বালবটা বদলানোর জন্য বাস থামিয়েছিল।
- একবার বিমলা সাক্ষ্য দিয়েছিল, আসামির কাঠগড়ায় ছিল — সৌম্য গুহ।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
If you have any questions please ask